ব্র্যাকে ভর্তি হয়ে বেশ কিছুদিন(কয়েক মাস,এখনও কিছু সময়ের জন্য সত্য) ধরে প্রচন্ড রকমের মন খারাপ। কোন একদিন ফেসবুকে ব্র্যাকে ভার্সিটি রিলেটেড সব গ্রুপে জয়েনে রিকুয়েস্ট করি। সেভাবেই এই গ্রুপের সন্ধান পাওয়া।
বিভিন্ন মানুষের লিখা পড়ার কারণে কন্টেস্ট সম্পর্কে ভাসা ভাসা আইডিয়া ছিল। কিন্তু ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েই programming language সহ বিভিন্ন টার্মের সাথে প্রথম পরিচয়। spring15 এর সেমিস্টার ব্রেকের কিছু আগে ঢাবির এক বন্ধুর(নাবিল) মাধ্যমে uri online judge এর খবর পাই। সলভ করতে গিয়ে প্রথম প্রবলেম সাবমিট করেই WA (uri 1001 may be)। এই গ্রুপে (BRACU Programming Contest Enthusiasts)পোস্ট করলাম, আপু উত্তর দিলো “Please , enter a number” প্রিন্ট করার কোন দরকার নেই । কেবল শুরু ……
রকিব স্যার থাকাকালীন ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয় নি। পরের সেমিস্টারে টার্কে চলে গেলাম। টার্ক থেকে ফিরে জয়েন করবো করবো করে ভয়ে আর করা হলো না। টার্কে কাওনাইন স্যার , রুবায়েত স্যার ,সামিউল স্যার প্রতি শনিবার যেতো। তখন uri এর প্রবলেম সলভ করতাম, সাহায্য নিতাম।
পরের সেমিস্টারেও টুকটাক সলভ করতাম/চেষ্টা করতাম, ডিসেম্বরে ফাইনালি জয়েন করলাম। এর আগে একটা কথা বলি একদিন রাতে ঘুমানোর আগে uva এর 3n+1 বিখ্যাত প্রবলেম (এই সাইটের নামও ঐ বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া। ও তখন এটায় সলভ করে) বহু চিন্তা করে লজিক ঠিক করি। পরের দিন ভোরে উঠে কোড করতে বসি, উত্তর মিলাই। টানা ৭/৮ বারের মতো সাবমিট করে প্রতিবারই WA(Wrong Answer) খাই। উত্তর ঠিকই প্রিন্ট করতেছে কিন্তু wa কেন?
আবার ক্লাসে ফিরে আসি। প্রথমদিন ক্লাসে ২/৩ টা প্রবলেম সলভ করার জন্য বলা হইছিল আমি ১ টা মনে হয় সলভ করতে পারছিলাম। লজ্জায় তাড়াতাড়ি বের হতে চাচ্ছিলাম। আর ঐদিনই জানি আমার ঐ প্রবলেম wa খাওয়ার কারণ ছিল আমি end of file পর্যন্ত ইনপুট নেই নাই। কারণ ঐ জিনিস সম্পর্কে আমার কোন আইডিয়া ছিল না।
প্রথম কন্টেস্ট করতে বসে ২/৩ টা সলভ করতে পারছিলাম ১০ টার মধ্যে। আর প্রথম যারা ছিল তারা ২/৩ ঘন্টার মধ্যেই সব সলভ করে ফেলছে। ঐ রাতেই তাদের জন্য আরেকটা কন্টেস্ট সেট করে দেয়া হতো। তারা যেন প্র্যাকটিস চালু রাখতে পারে। আমি অসহায়ের মতো ঐ কন্টেস্টে গিয়ে আরো ২/৩ টা সলভ করে আসতাম।
আমার uva তে তখন সলিউশন ৪/৫ টা আর প্রথম কয়েকজনের ১৪৫+। আমি সি++ স্ট্রিং নিয়ে অনেক ভুগছি , পরে শিখছি। আমি ক্লাসে সব জিনিস ধরতে পারতাম না, এইটা আজ অবধি সত্য কিন্তু পরে বাসায় এসে ঘেটে দেখে শিখে নিতাম/চেষ্টা করতাম, এখনো তাই করি। একাডেমিক কোর্সের ক্ষেত্রেও তা সত্য।
আমার ৩/৪ নাম্বার ক্লাসেই রাজকিন ভাইয়া BFS, DFS, Trie, Heap শিখাইছিল। কন্সেপ্ট ধরতে পারছি কিন্তু কোডের কিছুই বুঝি নাই । কিন্তু আমি ছাড়ি নাই।
আমি হুমায়ুন আহমেদের বই পড়া মানুষ তা ছাড়া বহু মানুষের কথা শুনছি এবং লিখা পড়ছি। “কচ্ছপের মতো কামড় দিয়ে” ধরে থাকতে পারি। হেরে যাওয়ার আগে হারতে রাজী না কিংবা বিলীন হতে রাজী না। আমি স্লো লার্নার কিন্তু লার্নার।
আমি এই শিখার এবং পার্টিসিপেট করার জার্নিটাকে ইঞ্জয় করছি। আমার বলার মতো কিংবা “সিভি” তে এড করার মতো কোন র্যাংক নাই, হবে নাকি জানিও না।
এতোগুলা কথা বলার কারণ ৪ দিনের workshop(BRACU Competitive Programming Workshop, April-May 2017) এ প্রতিদিন মানুষ কমছে যেটা এক্সপেক্টেড ছিল। চেষ্টা না করেই পারবো না বলাটা ঠিক মানানসই না। কেউ কোনকিছুতে ইন্টারেস্টেড ফিল না করলে ভিন্ন কথা। কিন্তু ইন্টারেস্টেড হয়েও নিজের উপর ভরসা না পাওয়াটা সমস্যা। ১/২ মাস চেষ্টা করো , এরপর যদি মনে হয় যে সম্ভব না তাহলে QUIT করো (Wasif ভাইয়া এই কথাটা বলছিল)। কচ্ছপের মতো শুধু পরে থাকাতে আবার সার্থকতা নেই। একটু একটু করে আগাতেও হবে সাথে।
Happy Coding :)
[ লিখাটা যতোটা না অন্যের জন্য তার চেয়ে বেশি নিজের জন্য ]